ভিটামিনের তালিকা, রাসায়নিক নাম, উৎস এবং অভাবজনিত রোগ

ভিটামিনের রাসায়নিক নাম, তাদের উত্স এবং অভাবজনিত রোগ

যখন পুষ্টি এবং সুস্থতার কথা আসে, তখন ভিটামিন আমাদের স্বাস্থ্য, শক্তির মাত্রা এবং সামগ্রিক শারীরিক কার্যকারিতা বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ভিটামিনের বৈজ্ঞানিক নাম এবং তাদের প্রাকৃতিক উৎস সম্পর্কে জানা আমাদের আরও ভাল খাদ্য নির্বাচন করতে সাহায্য করতে পারে।  

  • সমস্ত প্রধান ভিটামিনের বৈজ্ঞানিক নাম  
  • তাদের খাদ্য উৎস
  • অভাবজনিত রোগ

ভিটামিন হল জৈব যৌগ যা বিভিন্ন শারীরবৃত্তীয় কার্যের জন্য অপরিহার্য, এবং এগুলি তাদের দ্রবণীয়তার ভিত্তিতে শ্রেণিবদ্ধ করা হয়, যা তাদের শোষণ, সঞ্চয় এবং শরীরে কার্যকারিতাকে প্রভাবিত করে। নীচে দুটি প্রধান শ্রেণিতে ভিটামিনের স্পষ্ট শ্রেণিবিভাগ দেওয়া হল: চর্বিতে দ্রবণীয় এবং জলে দ্রবণীয়, সাথে তাদের প্রধান বৈশিষ্ট্য, উৎস এবং কার্যকারিতা।  

  • ভিটামিন A
  • ভিটামিন D
  • ভিটামিন E
  • ভিটামিন K

এই ভিটামিনগুলি চর্বি এবং তেলে দ্রবীভূত হয় এবং শরীরের চর্বিযুক্ত টিস্যু এবং যকৃতে সঞ্চিত হতে পারে। এগুলি খাদ্যে থাকা চর্বির সাহায্যে পাচনতন্ত্রের মাধ্যমে শোষিত হয়।  

  • শরীরে সঞ্চিত হয় (যকৃত এবং চর্বিযুক্ত টিস্যুতে), তাই প্রতিদিন গ্রহণ করা বাধ্যতামূলক নয়।  
  • অতিরিক্ত গ্রহণের ফলে সঞ্চয়ের কারণে বিষক্রিয়া হতে পারে।  
  • খাদ্যে চর্বির সাথে গ্রহণ করলে সবচেয়ে ভাল শোষণ হয়।  
  • ভিটামিন B কমপ্লেক্স
  • ভিটামিন C

এই ভিটামিনগুলি জলে দ্রবীভূত হয় এবং শরীরে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে সঞ্চিত হয় না। অতিরিক্ত পরিমাণ সাধারণত মূত্রের মাধ্যমে নির্গত হয়, তাই নিয়মিত খাদ্যের মাধ্যমে গ্রহণ করা প্রয়োজন।  

  • বড় পরিমাণে সঞ্চিত হয় না, তাই নিয়মিত খাদ্য গ্রহণ প্রয়োজন।  
  • অতিরিক্ত পরিমাণ মূত্রের মাধ্যমে নির্গত হয়, যা বিষক্রিয়ার ঝুঁকি কমায় (অত্যধিক পরিপূরক গ্রহণের ক্ষেত্রে ব্যতীত)।  
  • তাপ, আলো বা প্রক্রিয়াকরণের প্রতি সংবেদনশীল, যা খাদ্যে তাদের পরিমাণ কমিয়ে দিতে পারে।
ভিটামিনের নাম রাসায়নিক / বৈজ্ঞানিক নাম অভাবজনিত রোগ খাদ্যের উৎস
ভিটামিন A রেটিনল রাতকানা, জেরোফথালমিয়া যকৃত (লিভার), মাছের তেল, ডিম, দুগ্ধজাত পণ্য, গাজর, মিষ্টি আলু, পালং শাক, কেল, আম
ভিটামিন D ক্যালসিফেরল রিকেটস (শিশুদের মধ্যে), অস্টিওম্যালাসিয়া (প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে) সূর্যের আলো, চর্বিযুক্ত মাছ, ডিমের কুসুম, ফর্টিফায়েড দুধ, মাশরুম
ভিটামিন E টোকোফেরল প্রজনন ক্ষমতা কমে বাদাম, বীজ, পালং শাক, ব্রকলি, উদ্ভিজ্জ তেল
ভিটামিন K ফিলোকুইনোন রক্ত জমাট বাঁধে না সবুজ পাতাযুক্ত শাকসবজি, কিণ্বিত খাবার, মাংস, দুগ্ধজাত পণ্য
ভিটামিনের নাম রাসায়নিক / বৈজ্ঞানিক নাম অভাবজনিত রোগ খাদ্যের উৎস
ভিটামিন C অ্যাসকরবিক অ্যাসিড স্কার্ভি (মাড়ি থেকে রক্তপাত, ক্লান্তি, জয়েন্টে ব্যথা) সাইট্রাস ফল (কমলা, লেবু), শিমলা মরিচ, স্ট্রবেরি, ব্রকলি, টমেটো
ভিটামিন B1 থায়ামিন বেরি বেরি তাজা ফল, ভুট্টা, কাজু বাদাম, আলু, মিষ্টি আলু, মটরশুঁটি, গম, দুধ, খেজুর, কালো মটরশুটি ইত্যাদি।
ভিটামিন B2 রিবোফ্লাভিন ফাটা ঠোঁট, গলায় ব্যথা, ত্বকের সমস্যা কলা, আঙ্গুর, আম, মটরশুঁটি, কুমড়া, খেজুর, দই, দুধ, মাশরুম, পপকর্ন ইত্যাদি।
ভিটামিন B3 নিকোটিনিক অ্যাসিড / নিয়াসিন পেলাগ্রা মাংস, ডিম, মাছ, দুগ্ধজাত খাবার, পেয়ারা, মাশরুম, চীনাবাদাম, সিরিয়াল, সবুজ মটরশুঁটি ইত্যাদি।
ভিটামিন B5 পেন্টোথেনিক অ্যাসিড পেলাগ্রা, চর্মরোগ, ডায়রিয়া মাংস, কিডনি, ডিমের কুসুম, ব্রকলি, চীনাবাদাম, মাছ, মুরগির মাংস, দুধ, দই, শিম, মাশরুম, অ্যাভোকাডো ইত্যাদি।
ভিটামিন B6 পাইরিডক্সিন চর্মরোগ শুয়োরের মাংস, মুরগি, মাছ, রুটি, পুরো শস্যের সিরিয়াল, ডিম, শাকসবজি, সয়াবিন ইত্যাদি।
ভিটামিন B7 বায়োটিন ডার্মাটাইটিস, রক্তে কোলেস্টেরল বেড়ে যাওয়া, চুল পড়া ও পক্ষাঘাত আখরোট, চিনাবাদাম, সিরিয়াল, দুধ, ডিমের কুসুম, স্যামন, শুয়োরের মাংস, মাশরুম, ফুলকপি, অ্যাভোকাডোস, কলা, রাস্পবেরি ইত্যাদি।
ভিটামিন B9 ফলিক এসিড রক্তাল্পতা সাইট্রাস ফল, সবুজ শাকসবজি, গোটা শস্য, শিম, বিট ইত্যাদি।
ভিটামিন B12 সায়ানোকোবালামিন রক্তাল্পতা মাছ, মাংস, হাঁস-মুরগি, ডিম, দুধ ইত্যাদি।
  1. ভিটামিন A
    বৈজ্ঞানিক নাম: রেটিনল (Retinol)  
    অভাবজনিত রোগ: রাতকানা (Night Blindness), জেরোফথালমিয়া (Xerophthalmia)  
    উৎস: যকৃত (লিভার), মাছের তেল, ডিম, দুগ্ধজাত পণ্য, গাজর, মিষ্টি আলু, পালং শাক, কেল, আম  
  2. ভিটামিন B1 
    বৈজ্ঞানিক নাম: থায়ামিন (Thiamine)  
    অভাবজনিত রোগ: বেরিবেরি (Beriberi)  
    উৎস: সাবুদানা, শুকরের মাংস, মাছ, ডাল, বাদাম, বীজ  
  3. ভিটামিন B2
    বৈজ্ঞানিক নাম: রিবোফ্ল্যাভিন (Riboflavin) 
    অভাবজনিত রোগ: ফাটা ঠোঁট, গলায় ব্যথা, ত্বকের সমস্যা  
    উৎস: দুগ্ধজাত পণ্য, ডিম, সবুজ পাতাযুক্ত শাকসবজি, চর্বিহীন মাংস, বাদাম  
  4. ভিটামিন B3
    বৈজ্ঞানিক নাম: নিয়াসিন (Niacin)  
    অভাবজনিত রোগ: পেলাগ্রা (Pellagra) (ত্বকের রোগ, ডায়রিয়া, ডিমেনশিয়া)  
    উৎস: পোল্ট্রি, মাছ, গরুর মাংস, চিনাবাদাম, সাবুদানা, মাশরুম  
  5. ভিটামিন B5  
    বৈজ্ঞানিক নাম: প্যান্টোথেনিক অ্যাসিড (Pantothenic Acid)  
    অভাবজনিত রোগ: পেলাগ্রা, ত্বকের রোগ, ডায়রিয়া  
    উৎস: মুরগি, ডিম, অ্যাভোকাডো, ব্রকলি, সাবুদানা  
  6. ভিটামিন B6  
    বৈজ্ঞানিক নাম: পাইরিডক্সিন (Pyridoxine)  
    অভাবজনিত রোগ: রক্তাল্পতা, ত্বকের রোগ, বিষণ্ণতা, বিভ্রান্তি  
    উৎস: কলা, আলু, ছোলা, পোল্ট্রি, মাছ  
  7. ভিটামিন B7  
    বৈজ্ঞানিক নাম: বায়োটিন (Biotin)  
    অভাবজনিত রোগ: ত্বকের রোগ, রক্তে কোলেস্টেরল বৃদ্ধি, চুল পড়া, পক্ষাঘাত  
    উৎস: ডিমের কুসুম, যকৃত (লিভার), বাদাম, বীজ, স্যামন, অ্যাভোকাডো  
  8. ভিটামিন B9  
    বৈজ্ঞানিক নাম: ফলিক অ্যাসিড (Folic Acid)  
    অভাবজনিত রোগ: রক্তাল্পতা  
    উৎস: সবুজ পাতাযুক্ত শাকসবজি, মসুর ডাল, বিন, সাইট্রাস ফল, ফর্টিফায়েড সিরিয়াল  
  9. ভিটামিন B12  
    বৈজ্ঞানিক নাম: কোবালামিন (Cobalamin)  
    অভাবজনিত রোগ: রক্তাল্পতা  
    উৎস: মাংস, মাছ, ডিম, দুগ্ধজাত পণ্য, ফর্টিফায়েড উদ্ভিদ-ভিত্তিক দুধ  
  10. ভিটামিন C 
    বৈজ্ঞানিক নাম: অ্যাসকরবিক অ্যাসিড (Ascorbic Acid)  
    অভাবজনিত রোগ: স্কার্ভি (মাড়ি থেকে রক্তপাত, ক্লান্তি, জয়েন্টে ব্যথা)  
    উৎস: সাইট্রাস ফল, শিমলা মরিচ, স্ট্রবেরি, ব্রকলি, টমেটো  
  11. ভিটামিন D  
    বৈজ্ঞানিক নাম: কোলেক্যালসিফেরল (Cholecalciferol)  
    অভাবজনিত রোগ: রিকেটস (শিশুদের মধ্যে), অস্টিওম্যালেশিয়া (প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে)  
    উৎস: সূর্যের আলো, চর্বিযুক্ত মাছ, ডিমের কুসুম, ফর্টিফায়েড দুধ, মাশরুম  
  12. ভিটামিন E  
    বৈজ্ঞানিক নাম: টোকোফেরল (Tocopherol)  
    অভাবজনিত রোগ: বন্ধ্যাত্ব (Sterility)  
    উৎস: বাদাম, বীজ, পালং শাক, ব্রকলি, উদ্ভিজ্জ তেল  
  13. ভিটামিন K  
    বৈজ্ঞানিক নাম: ফাইলোকুইনোন (Phylloquinone)  
    অভাবজনিত রোগ: রক্তক্ষরণজনিত রোগ, হাড়ের দুর্বল স্বাস্থ্য  
    উৎস: সবুজ পাতাযুক্ত শাকসবজি, কিণ্বিত খাবার, মাংস, দুগ্ধজাত পণ্য
Recommended
Complete List of Static GK in Bengali
Study Materials for Competitive Examination
Scientific Name of Vitamins in English

নিচের লিঙ্কে ক্লিক করে, আপনি সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটটি দেখতে পারেন।

এখানে কিছু প্রায়শই জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন দেওয়া হলো, যা ভিটামিন, তাদের বৈজ্ঞানিক নাম এবং অভাবজনিত রোগ সম্পর্কিত — যা SSC ও অন্যান্য প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার জন্য উপযোগী।

Previous

Leave a Reply